Tuesday, May 15, 2018

বিশ্বকাপ ১৯৩৪ : যে আসরে ছিল না শিরোপাধারীরাই!

SHARE

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়, অমন বাঁধহারা আনন্দ তো ইতালিকেই মানায়!


দুয়ারে কড়া নাড়ছে ক্রীড়াবিশ্বের অন্যতম বড় আসর ফুটবল বিশ্বকাপ। আর মাত্র ২৯ দিন পরেই পুরো বিশ্ব মেতে উঠতে যাচ্ছে ফুটবলের উন্মাদনায়, যার আঁচটা পাওয়া যাচ্ছে এখন থেকেই। ফুটবল বিশ্বকাপ সামনে রেখে এনটিভি অনলাইনও নিয়ে এসেছে বিশেষ আয়োজন। আজ পাঠকদের সামনে হাজির করা হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বকাপের গল্প। ১৯৩৪ সালে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরের অনেক অজানা কথা নিয়ে থাকছে আজকের প্রতিবেদন।

অনেক অনেক ঘটনার ফুল দিয়ে তো গাঁথা হলো প্রথম বিশ্বকাপের মালা। এবার তার চার বছর পর ১৯৩৪ সালে মাঠে গড়াল ইতিহাসের দ্বিতীয় ফিফা বিশ্বকাপ। আশ্চর্য হলেও সত্যি, এই বিশ্বকাপে ছিল না বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরের শিরোপাজয়ী দল উরুগুয়েই!

সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে সিদ্ধান্ত হয়, ইতালির রাজধানী রোমেই হবে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর। আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে উরুগুয়েতে খেলতে রাজি হয়নি বেশ কটি ইউরোপীয় দল। সে রাগ থেকেই কি না দ্বিতীয় বিশ্বকাপের মঞ্চ ইউরোপে পাড়ি জমাতে আপত্তি তুলে আর পা-ই রাখেনি শিরোপাধারীরা।

আগেরবার বাছাইপর্ব না থাকলেও ১৯৩৪ সালের বিশ্বকাপ খেলতে দলগুলোকে লড়তে হয়েছে রোমের টিকেট পাওয়ার জন্য। ১৩ দলের বিশ্বকাপে খেলতে নিবন্ধন করে ৩৬ দল। সেখান থেকে বাছাই শেষে বেছে নেওয়া হয় ১৬ দল। ১২টি ইউরোপীয় দলের সঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকার দুটি দেশ তো ছিলই, আফ্রিকা মহাদেশের পক্ষ থেকে মিসর প্রথমবারের মতো যায় বিশ্বকাপের মঞ্চে। উত্তর আমেরিকার পক্ষে একমাত্র দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয় সে বিশ্বকাপে।

হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ইতালি (স্বাগতিক), চেকোস্লোভাকিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর—এই ১৬ দল নিয়ে ইতালিতে গড়ায় বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর। দেশটির মোট আটটি মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ম্যাচগুলো।

দ্বিতীয় আসরে ছিল শুধু দুটি গ্রুপই। দলগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে ২৭ মে শুরু হয় প্রথম রাউন্ডের খেলা। চমকটা জাগে সে রাউন্ড শেষেই। প্রথম পর্ব শেষেই বাদ পড়ে যায় উদ্বোধনী আসরের রানার্সআপ আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল প্রথম রাউন্ডের শিকে ছিঁড়তে পারেনি এবারেও।

বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরের বল ‘দ্য ফেডারেলে ১০২’।   


বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেবারই প্রথম আনা হয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব। আর অদ্ভুতভাবে কোয়ার্টার ফাইনালের আট দলই ছিল ইউরোপের। অবশ্য সেটাই ছিল প্রথম ও শেষবার ‘অল ইউরোপিয়ান কোয়ার্টার ফাইনাল’।

কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াই শেষে পাওয়া যায় সেরা চার দল। স্বাগতিক ইতালি ছাড়া বাকি তিন দল ছিল অস্ট্রিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া ও জার্মানি। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ প্রথম বিশ্বকাপে ছিল না।

এবার সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দুই দল জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে গড়ায় সেরা তৃতীয় দল হওয়ার লড়াই। সে ম্যাচে যখন জিতেছে জার্মানি, ইতালি আর চেকোস্লোভাকিয়া বিভোর নিজেদের অংশ নেওয়া প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নে।

অবশ্য ঘরের মাটিতে ইতালিকে হারাতে পারেনি চেকরা। ৫৫ হাজার দর্শকের সামনে রোমের স্তেদিও নেজিওনালে পিএনএফে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক ম্যাচ শেষে ২-১ ব্যবধানে ফাইনাল জিতে নিয়ে শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতে স্বাগতিকরা। হতাশাই সঙ্গী হলেও শুরুর আসরেই অমন বাজিমাতেই হয়তো বা সান্ত্বনা খুঁজে নেন চেকোস্লোভাকিয়ার খেলোয়াড়রা।
SHARE

Author: verified_user

0 comments: