১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে ব্রাজিল হট ফেভারিট। তাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা কেউ আটকাতে পারবে না এমনটা আলোচনা ছিল তখন। অনেক ফুটবল বিশ্লেষক আগাম ব্রাজিলকেই ওই আসরের শিরোপাধারী হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন। এমন অপ্রতিরোধ্য ব্রাজিলের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের ফাইনালের আগে যাতে মুখোমুখি হতে না হয়, সে জন্য নাকি কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ছিল স্বাগতিক ফ্রান্স।
মাঠের বাইরে ফুটবলারদের দাপট তো ছিলই। ওই বিশ্বকাপে জিনেদিন জিদানের দারুণ ফুটবল-শৈলী মনে গেঁথে থাকবে ফুটবুলপ্রেমীদের। কিন্তু মাঠের বাইরে আসল খেলাটা খেলেছিলেন ফ্রান্সের সাবেক ফুটবল তারকা মিচেল প্লাতিনি।
উয়েফার সাবেক প্রেসিডেন্ট বিষয়টা স্বীকারও করেছেন। স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা নিয়ে গ্রুপ পর্বের ড্র এমনভাবে করা হয় যাতে দারুণ ফর্মে থাকা ব্রাজিলের সঙ্গে ফাইনালের আগে মুখোমুখি হতে না হয় তাদের। তেমনটাই হয়েছিল। ফ্রান্স ফাইনালেই দেখা পেয়েছিল সেলেসাওদের। অবশ্য, হারের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বর্তমান রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদানের অসাধারণ নৈপুণ্যে প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তোলে ফ্রান্স। জিনেদিন জিদানের দুই গোল ও ইমানুয়েল পেটিটের গোলের সুবাদে ৩-০ গোলের ব্যবধানে তাঁরা হারিয়ে দেয় রোনালদো-লিমার দলকে।
এ ব্যাপারে প্লাতিনি বলেন, 'আমরা একটু কৌশলীই হয়েছিলাম। বিশ্বকাপের ক্যালেন্ডার যখন আমার হাতে আসে, এমনভাবে এটা সাজিয়েছিলাম যাতে ফাইনালের আগে ফর্মের তুঙ্গে থাকা ব্রাজিলের মুখোমুখি হতে না হয়।'
আত্মপক্ষ সমর্থনও করেন এই তারকা ফুটবলার। তিনি বলেন, 'আপনার কি মনে হয় অন্য স্বাগতিকরা তাঁদের নিজের সুবিধার জব্য এসব করে না? ছয় বছর বিশ্বকাপের আয়োজনে কাজ করে যদি এটুকু সুবিধা দিতে না পারি, তবে আর কি করলাম!'
প্লাতিনি হয়তো কিছুটা কৌশলের আশ্রয় নিয়ে দলকে সুবিধা দিতে চেয়েছেন। কিন্তু তাঁর এই 'পাতানো' ড্রয়ের ফলে ফ্রান্স ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল, এমন ভাবনাটা বোকামিই। কারণ সেমি-ফাইনালের ম্যাচে লিলিয়াম থুরামের অসাধারন দুই গোল, ফাইনালে জিদানের দারুণ শৈলীই বলে দেয়, ওই আসরের শিরোপার দাবিদারই ছিল ফ্রান্স।
0 comments: