Friday, June 15, 2018

আফগানদের কি একটু আগেই টেস্ট স্ট্যাটাস দিয়ে ফেলেছে আইসিসি?

SHARE


আফগানিস্তান  অভিষেক টেস্টটা হেরে গেল মাত্র দুদিনে। বেঙ্গালুরুতে প্রথম ইনিংসে ১০৯ রানে অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে গেল ১০৩ রান। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৬৭ ওভার ব্যাটিং করার পর প্রশ্নটা উঠতেই পারে, আফগানদের কি একটু আগেই টেস্ট স্ট্যাটাস দিয়ে ফেলেছে আইসিসি? নিজেদের দ্বিতীয় সারির একাদশ নিয়েও ভারত ম্যাচ জিতেচে ইনিংস ও ২৬২ রানের ব্যবধানে। 

এর আগে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে ভারত থেমেছিল ৪৭৪ রানে। ৩৬৫ রানের লিড ছিল, তবে আফগানদের গুটিয়ে দিতে ২৮ ওভারও লাগেনি বলে বোলারদের হাতে আরও একবার বল তুলে দিয়েছেন অজিঙ্কা রাহানে। এবার ৩৯ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে পারল আফগানরা। দুই ইনিংস মিলিয়ে ২১২ রান করেছে তারা। টেস্ট অভিষেকে দুই ইনিংস মিলিয়ে এটিই সবচেয়ে কম রান তোলার রেকর্ড!

দুই দিনেই টেস্ট শেষ হবে এই আলামত আফগানরাই দিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ ওভারের মধ্যে ফিরে এসেছিলেন প্রথম চার ব্যাটসম্যান। পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেট মিলিয়ে ৫৭ রান যোগ করে কিছুটা প্রতিরোধ তারা গড়তে পেরেছিল। সম্ভাবনা জাগিয়েছিল খেলা তৃতীয় দিনে টেনে নেওয়ার। কিন্তু সেই সম্মানটুকুও পেল না। 

বল হাতে ভারতের গল্পটা প্রথম ইনিংসের মতোই। প্রথমে পেসারদের ধাক্কা। আর তাতে টালমাটাল আফগানদের স্পিন বিষে নীল করে দেওয়া। আজ শুরুর দিকে টানা তিন ওভারে তিন উইকেট তুলে নিয়েছেন উমেশ যাদব। চতুর্থ উইকেট তুলে নিয়েছেন ইশান্ত শর্মা। এরপর স্পিনারদের রাজত্ব। পার্থক্য হলো, প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। এবার ৪ উইকেট নিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। প্রথম ইনিংসেও প্রথম চার ব্যাটসম্যানের তিনজনই ছিলেন পেসারদের শিকার। প্রথম উইকেটটা পড়েছিল রান আউটের খাঁড়ায়।

অশ্বিন জহির খানকে টপকে টেস্টে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে গেছেন এ ম্যাচে। প্রথম ইনিংসে আফগানিস্তানের এক ব্যাটসম্যানই কেবল ২০ রানের বেশি করতে পেরেছেন। সেও এসেছে সাতে নামা মোহাম্মদ নবীর ব্যাট থেকে। নবীর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ রান করেছেন ১০ নম্বর ব্যাটসম্যান মুজিব-উর রহমান। ইনিংসের একমাত্র ছক্কাও তাঁর ব্যাটে। আফগানরা অবশ্য প্রথম ইনিংসে ১৮টি চার মেরেছে।

চার-ছক্কা থেকে এসেছে ৭৮ রান। বাকি ৩১ রান তারা নিয়েছে দৌড়ে। টেস্ট ক্রিকেট কতটা কঠিন, এখান থেকেও বোঝা যায়। আফগান ব্যাটসম্যানরা খুব কম সময়ের জন্যই স্বস্তিতে ছিল। অশ্বিনের বলে পর্যন্ত ভূপাতিত হয়েছেন একজন। পেসারদের ভেতরে ঢোকানো আড়াআড়ি ডেলিভারিগুলো খেলতেই পারছিলেন না। বল ঠেকাতে বা ছাড়তে পারাও টেস্ট ক্রিকেটের যোগ্যতা। কখনো কখনো তা বাউন্ডারি হাঁকানোর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন আফগান ব্যাটসম্যানেরও রক্ষণাত্মক গুণ দেখা গেল না।

শেষমেশ তারা চলে গেল 'টি-টোয়েন্টি মোডে'। এই ক্রিকেটটাই তারা ভালো বোঝে কিনা! কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি। মাত্র ১৭ ওভারে ৫৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলা আফগানিস্তান মূলত নবী ও মুজিবের ওই দুই ইনিংসে শেষ চার উইকেটে ৫০ রান যোগ করতে পেরেছে। না হলে টেস্ট অভিষেকে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার লজ্জায় তারা পড়তেই বসেছিল! ১৮৮৯ সালে টেস্ট অভিষেকে ৮৪ রানে অলআউট হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানরা শুরুটা করেছিল বেশ সতর্কভাবে। বিনা উইকেট ১৯ রান তুলেও ফেলেছিল। এরপর ৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট নেই! হাশমতুল্লাহ আর স্টানিকজাইয়ের মাঝখানের ওই প্রতিরোধটুকু বাদে আর কোনো লড়াই নেই। একবারও মনে হয়নি, টেস্ট খেলছে আফগানরা। সেই মননটাই তৈরি হয়নি টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডের চমক জাগানো এই দলটির। সামনে হাঁটতে হবে বিস্তর পথ।
SHARE

Author: verified_user

0 comments: